মনপুরা দ্বীপ

পরিচিতদেরকে জানাতে শেয়ার করুন

মনপুরা দ্বীপ (Manpura Island) বাংলাদেশের ভোলা জেলার অন্তর্গত বঙ্গোপসাগর এলাকার মেঘনা নদীর মোহনায় অবস্থিত একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। এই দ্বীপের আয়তন ৩৭৩ বর্গ কিলোমিটার। মনপুরা দ্বীপের পূর্ব, পশ্চিম এবং উত্তর দিকে মেঘনা নদী আর দক্ষিণ দিকে রয়েছে বঙ্গোপসাগর। মনোমুগ্ধকর সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ দেখার জন্য মনপুরা দ্বীপ আদর্শ জায়গা। এছাড়া এই দ্বীপে রয়েছে হরিণের অভয়াশ্রম, মনপুরা চৌধুরী প্রজেক্ট এবং ল্যান্ডিং স্টেশন। মেঘনা নদীর ৫০০ মিটার ভেতরে মনপুরা ল্যান্ডিং স্টেশনটির  অবস্থান। বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত স্থানীয় মানুষজন ও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা এখানে ঘুরতে আসেন।

দ্বীপের হরিণের অভায়াশ্রমের হরিণগুলো জোয়ারের সময় প্রধান সড়কের খুব কাছে চলে আসে। মাঝে মাঝে হরিণ পালের রাস্তা পার হবার জন্য বাইক থামিয়ে অপেক্ষা করতে হয়। এছাড়া এই দ্বীপে চৌধুরী প্রজেক্ট নামে একটি মাছের ঘের রয়েছে। বিশাল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত পুকুর ও লেকের পাড় জুড়ে সারি সারি নারিকেল গাছ একটা বিকেল কাটানোর জন্য বেশ চমৎকার জায়গা। সাইক্লিং এবং ক্যাম্পিং করার জন্য মনপুরা দ্বীপ একটি আদর্শ জায়গা হতে পারে । সাইকেল নিয়ে নদী এবং সবুজের রাজ্যে হারিয়ে যাওয়া রোমাঞ্চকর অনুভূতি নিতে ঘুরে আসতে পারেন মনপুরা দ্বীপ থেকে । 

মনপুরা দ্বীপ ভ্রমণের উপযুক্ত সময়

শীতকাল মনপুরা দ্বীপ ভ্রমণের সবচেয়ে আদর্শ ও উপযুক্ত সময়। শীতকালে মনপুরায় ক্যাম্পিং করতে এডভেঞ্চার প্রমি  ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে আসেন মনপুরা দ্বীপে।

আরও পড়ুনঃ নিকলী হাওর ভ্রমণ গাইড

কিভাবে যাবেন

বিছিন্ন দ্বীপ হওয়ায় লঞ্চ বা ট্রলার হচ্ছে মনপুরা দ্বীপে যাওয়ার একমাত্র বাহন। ঢাকার সদরঘাট থেকে এমভি ফারহান-৩ এবং ৪ নামে দুটি লঞ্চ প্রতিদিন বিকাল ৫ টায় হাতিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে সকাল ৭ টা থেকে ৭ টা ৩০ মিনিটের মধ্যে মনপুরা দ্বীপে পৌঁছে যায়। লঞ্চ থেকে সূর্যোদয় দেখতে খুব চমৎকার লাগে। লঞ্চের ডেক চড়ে যেতে জনপ্রতি ভাড়া  ৩৫০ টাকা। আবার মনপুরা রামনেওয়াজ লঞ্চঘাট থেকে দুপুর ২ টায় লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। 

এছাড়া ঢাকা কিংবা বরিশাল থেকে ভোলা হয়ে তজুমদ্দিন ঘাটে এসে সি-ট্রাকে করেও মনপুরা দ্বীপে আসা যায়। প্রতিদিন বিকাল ৩ টায় তজুমদ্দিন থেকে সি-ট্রাকটি ছাড়ে আর মনপুরা থেকে সকাল ১০ টায় ফিরতে সি-ট্রাক ছেড়ে আসে। ভোলার চরফ্যাশনের বেতুয়া ঘাট থেকেও দুটি লঞ্চ মনপুরার জনতা বাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। তবে এপ্রিল থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত এই নৌপথটিকে ডেঞ্জার পয়েন্ট হিসেবে গন্য করা হয়, তাই এই ৮ মাস এই রুটে লঞ্চ চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে।  

কোথায় থাকবেন

মনপুরা দ্বীপে রাত্রি যাপনের জন্য ৩ টি প্রতিষ্টানের (সরকারি ডাকবাংলো, প্রেসক্লাব বাংলো, এবং কারিতাস বাংলো) ডাকবাংলো আছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় এই বাংলোগুলিতে রাত্রি যাপন করতে পারবেন।

কি খাবেন

শীতকালে মনপুরা দ্বীপে খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার হাসেঁর মাংস ভূনা। তাছাড়া মহিষের দুধের তৈরী দধি, নদীর টাটকা ইলিশ, কোরাল, বোয়াল এবং গলদা চিংড়ির স্বাদ নিতে পারেন।


পরিচিতদেরকে জানাতে শেয়ার করুন
error: Content is protected !!