রাজশাহী কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা
রাজশাহী কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা ও উদ্যান রাজশাহী মহানগরবাসীর অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র। পদ্মার তীর ঘেঁষা এক সময়ের রেসকোর্স ময়দানের ৩২.৭৬ একর জায়গা জুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা । রাজশাহী শহর থেকে চিড়িয়াখানার দূরত্ব মাত্র ৪ কিলোমিটার। ১৯৭২ সালে শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জাম সড়কের কাছে রাজশাহী কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানার নির্মাণ কাজ শুরু করে ১৯৭৪-৭৬ সালে রাজস্ব বিভাগের অনুমতিক্রমে এখানে চিড়িয়াখানার পাশাপাশি একটি শিশু পার্ক নির্মাণ করা হয়। তখন থেকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানাটি শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা (Shaheed A.H.M. Kamruzzaman Central Park & Zoo) নামে পরিচিতি লাভ করে।
চিড়িয়াখানার প্রধান ফটকে জিরাফের বিশাল ভাস্কর্য ও মৎস্য কুমারীর ফোয়ারা নজরে পড়ে। নানারকম ফুল, ফল ও ঔষধি গাছের ছায়া ঘেরা পার্কের ভিতরে বিভিন্ন দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য ও নান্দ্যনিক ব্রিজ সহ একটি ছোট্ট লেক দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে বার বার। চিড়িয়াখানায় উল্লেখযোগ্য সংগ্রহের মধ্যে স্থান পেয়েছে বালিহাস, বাজরিকা, ঘোড়া, হরিণ, উদবিড়াল, অজগর সাপ, কুমির সহ বিভিন্ন জলজ ও স্থলজ পশুপাখি। মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশের পাশাপাশি এই উদ্যানের কৃত্রিম পাহাড় থেকে পদ্মা নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। এছাড়া পার্কে দর্শনার্থীদের চিত্তবিনোদনের জন্য নাগর দোলা , প্যাডেল বোট সহ বেশকিছু আকর্ষণী রাইড রয়েছে।
বর্তমানে এই শিশু পার্কটি রাজশাহী শহরের অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। রাজশাহীর স্থানীয় দর্শনার্থী ছাড়াও প্রতিদিন বনভোজ ও শিক্ষা সফরের উদ্দেশ্যে এখানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী ও দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে।
উদ্যান ও চিড়িয়াখানা প্রবেশমূল্য ও সময়সূচী
রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। জনপ্রতি ২৫ টাকা মূল্যের টিকেট সংগ্রহ করে যে কেউ এখানে প্রবেশ করতে পারে। তবে পিকনিক স্পটের জন্য আলাদাভাবে ফি দিতে হয়।
আরও পড়ুনঃ জাফলং ভ্রমণ গাইড
রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান যাবার উপায়
ঢাকা থেকে সড়ক, রেল এবং আকাশ পথে রাজশাহী যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। ঢাকার মহাকালী, আব্দুল্লাহপুর, গাবতলী ও কল্যাণপুর থেকে একতা, গ্রীন লাইন এবং দেশ ট্রাভেলসের এসি বাস ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা ভাড়ায় রাজশাহীর উদ্দেশ্যে যাতায়াত করে। আর হানিফ, শ্যমলি, বাবলু এন্টারপ্রাইজ, ন্যাশনাল ট্রাভেলস ইত্যাদি বিভিন্ন পরিবহনের নন-এসি বাস ৭৫০ থেকে ১০০০ টাকা ভাড়ায় চলাচল করে।
কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে বনলতা, সিল্কসিটি, ধুমকেতু এবং পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেন রাজশাহীর পথে চলাচল করে। ট্রেনের শ্রেণীভেদে ভাড়া জনপ্রতি ৩৪০ থেকে ১২২৩ টাকা। এছাড়া কম সময়ে রাজশাহী যেতে চাইলে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার ও ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স এর ফ্লাইটে রাজশাহী যেতে পারবেন।
রাজশাহী শহরের জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে রাজশাহী জাতীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা অবস্থিত। শহরের জিরো পয়েন্ট থেকে রিকশা বা ইজিবাইকে চড়ে সহজে এই উদ্যানে যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
রাত্রিযাপনের জন্য রাজশাহী শহরের বেশ কিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে। হোটেলগুলোর মধ্যে পর্যটন কর্পোরেশন মোটেল, হোটেল স্টার ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল গ্রিন সিটি ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল নাইস ইন্টারন্যাশনাল এবং মুক্তা ইন্টারন্যাশনাল অন্যতম।
কোথায় খাবেন
পার্কের আশেপাশে বেশকিছু ভালো মানের রেস্তোরা পাবেন। এছাড়া রাজশাহী শহরের ভাল মানের ফাস্টফুড, চাইনিজ ও বাংলা খাবারের রেস্তোঁরা রয়েছে।
রাজশাহীর অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
রাজশাহীর অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর, বাঘা মসজিদ, শিশু পার্ক ও পুটিয়া রাজবাড়ী প্রভৃতি।