শিশু মেলা বা ডিএনসিসি ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্ক
শিশু মেলা (Shisu Mela) যার বর্তমান নাম ‘ডিএনসিসি ওয়ান্ডারল্যান্ড’। এটি রাজধানীর শ্যামলীতে প্রথম বেসরকারী ভাবে নির্মিত শিশু পার্ক। ঢাকায় বসবাস রত শিশুদের জন্য শ্যামলীর এই শিশু মেলা পার্কটি অন্যতম আকর্ষণীয় বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ঢাকাবাসীদের কাছে। ১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর শ্যামলীর শিশু হাসপাতালের পাশে প্রায় দের একর ভূমির উপর শিশু পার্কের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়। তখন গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে শিশু পার্ক নির্মাণের জন্য ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয়। পরবর্তীতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে শ্যামলীর এই পার্কে নিজ খরচে আধুনিক খেলার যন্ত্রাংশ স্থাপন করার জন্য ইজারা দেয়া হয়। তখন থেকে যাত্রা শুরু হয় শ্যামলী শিশু মেলা পার্কের। এখন গড়ে প্রতিদিন ১২০০-১৩০০ দর্শনার্থী শিশু মেলা ঘুরতে আসেন।
শিশু মেলার অবস্থান
রাজধানী ঢাকার শ্যামলীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বা হৃদরোগ হাস্পাতালের উত্তর দিকে এবং শিশু হাসপাতালের পশ্চিম দিকে মেইন রোডের পাশেই ডিএনসিসি ওয়ান্ডারল্যান্ড’ এর অবস্থান। যা শিশুদের জন্য শিশু মেলা (Shisu Mela) বা আনন্দ রাজ্য হিসেবে পরিচিত। ঢাকার যে কোন জায়গা থেকে মিরপুর গামী যেকোনো বাস চরে শ্যামলী ডিএনসিসি ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্ক আসা যায়।
শিশু মেলা সময়সূচী
শ্যামলী ডিএনসিসি ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্ক সপ্তাহে ৭ দিনই খোলা থাকে।
- গ্রীষ্মকালীন সময়ে অর্থাৎ মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত শিশু মেলা দর্শনার্থীদের জন্য সকাল ১০ টা থেকে রাত ৯.৩০ পর্যন্ত খোলা থাকে।
- শীতকালীন সময়ে অর্থাৎ নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শিশু মেলা দর্শনার্থীদের জন্য সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮.৩০ পর্যন্ত খোলা থাকে।
আরও পড়ুনঃ ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর ভ্রমণ গাইড
শিশু মেলা টিকেট মূল্য
পার্কে প্রবেশের জন্য ২ বছরের উপরে শিশু সহ সকলের জন্য টিকেট সংগ্রহ করতে হবে। পার্কে প্রবেশের পর প্রতিটি রাইডস এ চড়তে আলাদা আলাদা টিকেট সংগ্রহ করতে হয়। পার্কে প্রতিটি রাইডস উঠতে ৫০ টাকা মূল্যের টিকেট সংগ্রহ করতে হবে। ডিএনসিসি ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্কে মোট ২০টি রাইডস রয়েছে। কিছু রাইডস এ শিশুদের পাশাপাশি বয়স্করাও উঠতে পারবেন।
এখানে প্রবেশের জন্য টিকেট মূল্য জন প্রতি ৬০ টাকা। ২ বছরের উপরের সকল শিশুদের প্রবেশের জন্য অবশ্যই টিকেট নিতে হবে।
শিশু মেলা পার্কে রাইডস সমূহ
এই পার্কে শিশুদের জন্য রয়েছে নানা ধরনের শতাধিক রাইডস।
১। কিডিরাইডস্ গেমস্
২। মেরী গো রাউন্ড
৩। চুক চুক ট্রেন
৪। হ্যানি সুইং
৫। সোয়ান অ্যাডভেনচার
৬। প্যারাট্রুপার
৭। মিনি ট্রেন
৮। টোয়িস্ট
৯। ব্যাটারীব কার
১০। পেনডুলাম
১১। ভিডিও গেমস্
১২। হেলিকপ্টার কর্ণার
১৩। বাউন্সী ক্যাসল
১৪। ভাইকিং বোট
১৫। ড্রাগন রোলার কোষ্টার
১৬। স্পেইস শ্যাটল
১৭। ওয়ান্ডার হুইল
১৮। থ্রী-ডি গ্যালারী
১৯। থ্রী-ডি অ্যাডভেঞ্চার
২০। বাম্পার কার
শ্যামলী শিশু মেলা কি ভাবে যাবেন
ঢাকার যে কোন জায়গা থেকে শ্যামলী যাবার বেশ কয়েকটি লোকাল বাস সার্ভিস রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ কাপ্তাই লেক ভ্রমণ গাইড
এগুলোর মধ্য রয়েছে-
লাব্বায়েক পরিবহন – যাত্রাবাড়ী, সায়দাবাদ, মুগদা, খিলগাঁও, মালিবাগ, মগবাজার, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, আসাদগেট, শ্যামলী, গাবতলী হয়ে সাভার পর্যন্ত যাতায়াত করে।
সুপার বাস – গুলিস্তান ,শাহবাগ, ফার্মগেট, শ্যামলী, গাবতলী, সাভার, নবীনগর।
পল্লবী লোকাল সার্ভিস – আসাদ গেট, শ্যামলী, কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল, মিরপুর ১, মিরপুর ২, মিরপুর ৬, চলন্তিকা মোড়, মিরপুর ৭, মিরপুর ১১, মিরপুর ১২।
বাহন পরিবহন – মিরপুর-১৪, মিরপুর-১৩, মিরপুর-১০, মিরপুর-২, মিরপুর-১, টেকনিক্যাল, কল্যাণপুর, শ্যামলী, কলেজগেট, আসাদগেট, কলাবাগান, সিটিকলেজ, সাইন্সল্যাব, শাহবাগ, প্রেসক্লাব, পল্টন, মতিঝিল শাপলা চত্তর, আরামবাগ, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন।
বৈশাখী পরিবহন – সাভার, গাবতলী, কল্যাণপুর, শ্যামলী, আগারগাঁও, নতুন রাস্তা, মহাখালী, গুলশান ১, বাড্ডা লিঙ্ক রোড, নতুন বাজার।
তেতুলিয়া পরিবহন – শিয়া মসজিদ, শ্যামলি, আগারগাও, মিরপুর ১০, কালশী, বিশ্বরোড, এয়ারপোর্ট, উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর।
এই সকল বাস সার্ভিসের যে কোনটিতে চরে শ্যামলী বাসস্ট্যান্ডে নেমে যাবেন, বাসস্ট্যান্ডে নামলেই শ্যমলী শিশু মেলা দেখতে পাবেন।
কোথায় খাবেন
পার্কের ভিতরে বেশ কিছু খাবারের দোকান রয়েছে, এছাড়াও শিশু হাসপাতালের আশে পাশে কয়েকটি হোটেল পাবেন সেখান থেকে দুপুরের খাবার সেরে নিতে পারেন। এখানে ভিতরে খেতে চাইলে অবশ্য দাম যেনে নিবেন।